আর্টিস্ট
"রং ধুয়ে যাচ্ছে...সব রং ধুয়ে যাচ্ছে! আটকাও ওদের! যাতে যেতে না পারে..." ভালোবাসা মেন্টাল হোমের বাহান্ন নম্বর সেলের সামনে দিয়ে যেতে হলে আসলে এরকমই কিছু শোনা যায়। নতুন কেউ এলে সে প্রথম প্রথম চমকে ওঠে। চমক ভাঙে ওর্য়াডবয় সুরথের কথায়। কৌতূহলী প্রশ্নের উত্তরে বলতে বলতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, "আর্টিস্ট ছিলো ছেলেটা।"
ভিতরের খবর সকলের কাছে অজানাই রয়ে যায়। শুধু ঘর পরিষ্কার করার লোকটা দেখে, বাহান্নর পেশেন্ট রুমের পরিষ্কার সাদা দেওয়ালে কাঠপেন্সিল দিয়ে দুর্বোধ্য ছবি আঁকে। সে ওই দাগ মুছতে গেলে তুলকালাম বাঁধায়। লোকটা শুধু দেখেই, জানে না। দেখা-জানায় বিস্তর ফারাকের সচেতনতা নিয়েই রোজ ডাক্তার ঢোকে। দেখা তার পর্যবেক্ষণে, জানার পালা পড়ে থাকে কেস-হিস্ট্রিতে। সঠিক কারণ আবিষ্কার না করা গেলেও, ডাক্তারের কাছে এটুকু পরিষ্কার, অন্যপথে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়ে, তার শিল্পীসত্ত্বাকে মেরে ফেলেছিলো ছেলেটা। এরকম তো আকছার ঘটে। কিন্তু সবাই চাপ সামলাতে পারেনা। ভেঙে নুইয়ে পড়ে, চাপে গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে যায়।
বাড়ির লোকই এখানে পাঠিয়েছিলো তাকে। বছরখানেকের চেষ্টায়, ছেলেটা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে। একদিন মুক্তির ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ির লোক তাকে নিতে আসে। ডাক্তার তার প্রেসক্রিপশান করে দেয়। ওয়ার্ডবয় সুরথ যাওয়ার দিন, তার কিছু জিনিস গাড়িতে তুলে দিতে গিয়ে কি মনে করে বলে, "আপনি এটা ফেলে যাচ্ছেন।" ছেলেটা ক্লান্ত চোখ তুলে সুরথের মুঠোয় ধরা জিনিসটাকে চিনতে পারে না। বলে, "ও তো একটা পেন্সিল, কি হবে?" সুরথ মাথা একদিকে হেলিয়ে হাসিমুখে তাকে বিদায় জানায়। তারপর হোমের বন্ধ হয়ে যাওয়া বিশাল গেটটার দিকে তাকিয়ে নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে, "ছেলেটা আর্টিস্ট ছিল!"
Shashi Dasgupta
Yorum Sil
Bu yorumu silmek istediğinizden emin misiniz?
Deep `DeviL` Mitra
Yorum Sil
Bu yorumu silmek istediğinizden emin misiniz?